আব্দুর রহমান রিটন, মহেশখালীঃ
কক্সবাজার জেলায় বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সমুদ্র সৈকত রয়েছে।পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার ছাড়াও রয়েছে মাতারবাড়ী সমুদ্র সৈকত,কুতুবদিয়া সমুদ্র সৈকত, সোনাদিয়া সমুদ্র সৈকত ও বড় মহেশখালীর চরপাড়া সৈকত।ভৌগোলিক বিশেষ কারণে এসব অঞ্চলে প্রকৃতির সৌন্দর্য মন্ডিত সৈকত গড়ে উঠেছে।
মহেশখালী উপজেলা মাতারবাড়ী ইউনিয়ন বিশেষ কারণে বেশ আলোচিত।মাতারবাড়ীর উত্তর ও দক্ষিণ পাশে দুটি বিশালাকার উন্নয়ন প্রকল্প। মাতারবাড়ীর পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন মগনামা ইউনিয়নেও চলছে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের উন্নয়নের কাজ।এই সমস্ত প্রকল্প যে এলাকায় স্থাপিত হচ্ছে,সেসব এলাকাগুলো সমুদ্রের নোনাজলে প্রতিনিয়ত প্লাবিত হতো।প্রকল্পের দীর্ঘস্থায়ীতা বা প্রকল্পের ভূমি উচু করার জন্য প্রয়োজন মাটি।তাছাডা এসব প্রকল্পের জন্য যে জায়গাগুলো অধিগ্রহণ করা হয়েছে,তা সবগুলোই সমুদ্রের তীরবর্তী জায়গাসমূহ।ফলে প্রকল্পের জায়গাগুলো উচু করার জন্য সমুদ্রের চরে ড্রেজার বসিয়ে বালি উত্তোলন করে ভরাট করা হচ্ছে প্রকল্পের নিচু এলাকাসমূহ।
সমুদ্রের চরঘেষে বালি উত্তোলনের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির সৌন্দর্য মন্ডিত সৈকত।সে সাথে হুমকির মুখে পড়ছে বেঁডিবাধ।বর্তমানে মাতারবাড়ী সমুদ্র সৈকত হতে মাতারবাড়ীর দুটি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং মগনামা সাবমেরিন প্রকল্পের জন্য বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয়দের কাছে থেকে জানা যায়, এসব প্রকল্পের জন্য বালি উত্তোলনের ফলে মাতারবাড়ী সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য আগে যে পরিমান ছিল বর্তমানে তা তিন-ভাগের এক ভাগে কমে এসেছে।এছাড়া বর্তমান সৈকত আগের চেয়ে ৫-৬ফুট নিচু হয়ে গেছে।ফলে অনায়াসে সমুদ্রের ঢেউ সরাসরি বেঁডিবাধে এসে পাড়ে।
তীরঘেষে বালি উত্তোলনের ফলে একদিকে হারিয়ে যাচ্ছে সমুদ্র সৈকত, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেড়িবাঁধ এবং সেই সাথে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন নিম্নবর্গের মানুষের বসবাস।এছাড়া মাতারবাড়ী ৭০ নম্বর হোল্ডারের বাহিরে পশ্চিমদিকে যে ব্যক্তিগত মালিকানা ভূক্ত জমিগুলো ছিল, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে তলিয়ে যাচ্ছে সে জমিগুলো।তীরঘেষে বালি উত্তোলন করা নিয়ে, প্রতিনিয়ত প্রতিবাদ করে আসছেন মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব জিএম ছমি উদ্দীন। তিনি বলেন, আমাদের আগে যে সৈকত ছিল, তা বর্তমানে আর নেই।মাতারবাড়ীর দুটি প্রকল্পের জমি ভরাটের জন্য মাতারবাড়ী সমুদ্র সৈকতের চরের বালিগুলো ড্রেজারের মাধ্যমে তুলে নিম্ন / খাল গুলো ভরাট করা হচ্ছে। এছাড়া মগনামা ইউনিয়নে চলমান সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমি গুলো ভরাট করার জন্য বালি নেওয়া হচ্ছে মাতারবাড়ী সমুদ্র তীর ঘেষে।সরকারে চলমান প্রকল্পের জন্য যদি বালি উত্তোলন করতে হয়,তাহলে কুতুবদিয়া এবং মাতারবাড়ী মাঝখানে ড্রেজার বসিয়ে সে বালি উত্তোলন করা হউক।তাই আমি প্রকল্পের জন্য যারা বালি উত্তোলন করতেছে,তাদের অনুরোধ করব,আপনারা মাতারবাড়ী উপর এমন অত্যাচার করবেন না,আপনাদের দৌরাত্ম্যে হারিয়ে যাচ্ছে মাতারবাড়ী।হুমকির মূখে পড়েছে মাতারবাড়ী রক্ষার একমাত্র বেড়িবাঁধ।