টেকনাফ প্রতিনিধিঃ
মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা ক্রমাগত বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এসব রোহিঙ্গারা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ-সংঘাতের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণ এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। একই সঙ্গে অপহরণ, মাদক ব্যবসা, চুরি-ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। নানা অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। বেড়েছে অপহরণ। গত মাসে ৪টির উপরে ঘটেছে অপহরণের ঘটনা। কোনভাবে তাদের অপকর্ম থামানো যাচ্ছে না। একের পর এক ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা। বিগত কয়েকদিন ধরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে টেকনাফের কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখি করছে।
এদিকে, টেকনাফে স্থানীয় বাংলাদেশি হাবিব উল্লাহর পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় দুই রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করেছে আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন)।
তারা হলেন- জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের ৮নং ব্লকের বাসিন্দা মৃত বশরের ছেলে ফজল হক (৫০) ও একই ক্যাম্পের মোহাম্মদ জামালের স্ত্রী হামিদা খাতুন (২৫)।
গত ৩ জুলাই দুপুরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গত ৩০ জুন ভোরে জাদিমোরার স্থানীয় বাসিন্দা হাবিব উল্লার পরিবারের ওপর গুলি চালায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী হাসেম উল্লাহ গ্রুপ। এসয় হাবিবের পরিবারের তিন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়। ওই দিন টেকনাফ থানায় হাবিব উল্লাহ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-৯২/৫২১)। এ মামলার অন্যতম আসামী ফজল ও হামিদা। এছাড়াও ফজল ক্যাম্পে অপহরণ বাণিজ্যসহ নানা অপরাধে জড়িত বলে এপিবিএন কর্মকর্তাদের দাবি।
১৬ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, স্থানীয় তিন বাসিন্দার ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কোন অপরাধীর ছাড় নাই। ক্যাম্প এলাকায় আইন শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জানা যায়, কয়েকদিন আগে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য ডাকাতির বার্তা দিয়ে যাচ্ছে। এতে আতঙ্কের দিন কাটাচ্ছে জাদিমুড়া এলাকার বাসিন্দারা। বিগত কয়েকদিন ধরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড জাদিমুড়া এলাকায় ডাকাতের ভয়ে স্থানীয় মেম্বারসহ গ্রাম পাহারা দেন গ্রামবাসী। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় উখিয়া-টেকনাফের মানুষ এখন রাতে ঘুমাতে ভয় পায়।উখিয়া-টেকনাফের মানুষ এখন খুবই ভয়ের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছেন। বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে খুন,অপহরণ, ডাকাতিসহ নানা অপরাধ।
সূত্র মতে,পাহাড়ি রোহিঙ্গা ডাকাতেরা বড় বড় ইয়াবার গডফাদার। তারা মূলত ইয়াবার চালান খালাস করতেই ডাকাতের রূপধারন করেছে। এবং বিভিন্ন সময় অপহরণ করেও মুক্তিপণ আদায় করছে।
উল্লেখ যে, রবিবার রাত ১০ টার দিকে রোহিঙ্গা ডাকাতেরা স্থানীয়দের চিঠির মাধ্যমে খবর দেয় যে, সোমবার জাদিমুড়া এলাকায় ডাকাতি হবে। এমন বার্তায় ঘুম হারাম হয়ে গেছে হ্নীলার এলাকার মানুষের।
স্থানীয় এক শিক্ষক জানান, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের এমন বার্তা গা শিউরে উঠবার মতো একটি ছবি। এখানে স্থানীয় মেম্বার, গ্রাম পুলিশ ও সাধারণ মানুষ রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন রোহিঙ্গা ডাকাতদের ভয়ে। একবার ভাবুন তো পরিস্থিতি কোন জায়গায় গিয়ে ঠেকলে গ্রামের মানুষ ভয়ে আতঙ্কে লাঠি হাতে ঠাই দাঁড়িয়ে নির্ঘুম রাত পার করে দিতে হয়। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, উখিয়া-টেকনাফের মানুষ ইয়াবা,সন্ত্রাস এবং সর্বোপরি রোহিঙ্গাদের থেকে বাচঁতে চাই।
এই বিষয়ে টেকনাফ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমানের বক্তব্য জানতে চাইলে বলেন, আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়া বক্তব্য দেওয়া নিষেধ।